Lionel Messi , ফুটবল জগতের অন্যতম বড় তারকা। তাঁর দক্ষতা, প্রতিভা, এবং অসংখ্য রেকর্ড গড়ার কারণে তিনি ফুটবল ভক্তদের কাছে একজন দেবতার মতো। তবে মেসি সম্পর্কে এমন অনেক তথ্য রয়েছে যা হয়তো অনেকেই জানেন না। আসুন জেনে নিই মেসি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য:
এক নজরে লিওনেল মেসি অজানা দুনিয়া
লিওনেল মেসি একজন আর্জেন্টাইন পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় যিনি মেজর লিগ সকার ক্লাব ইন্টার মায়ামি এবং আর্জেন্টিনার জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে একজন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। তিনি বর্তমানে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মেসির জন্ম ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন, আর্জেন্টিনার রোসারিও শহরে। তিনি শৈশবেই তার ফুটবল প্রতিভা প্রকাশ করেন এবং ১৩ বছর বয়সে বার্সেলোনা ক্লাবের যুব একাডেমিতে যোগ দেন। ২০০৪ সালের অক্টোবরে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি বার্সেলোনার মূল দলের হয়ে অভিষিক্ত হন।
মেসি বার্সেলোনার হয়ে এক কিংবদন্তি খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি ক্লাবের হয়ে ৭৭৮টি ম্যাচে ৬৭২টি গোল করেন, যা একটি ক্লাব রেকর্ড। তিনি বার্সেলোনার হয়ে ৪০টি শিরোপা জিতেন, যার মধ্যে ১০টি লা লিগা শিরোপা, ৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা এবং ৭টি কোপা দেল রে শিরোপা রয়েছে।
মেসি আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের হয়েও একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তিনি আর্জেন্টিনার হয়ে ১৬২টি ম্যাচে ৮৬টি গোল করেন। তিনি আর্জেন্টিনার হয়ে ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা জয় করেন, যা আর্জেন্টিনার দীর্ঘ ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটায়।
মেসিকে সর্বকালের সেরা ফুটবল খেলোয়াড়দের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি তার অসাধারণ গোল করার ক্ষমতা, দক্ষতা, এবং দৃষ্টিশক্তির জন্য প্রশংসিত। তিনি তার খেলার মাধ্যমে ফুটবলকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছেন।
মেসির ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কেও অনেক আলোচনা হয়। তিনি ২০১৭ সালে আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোকে বিয়ে করেন। তাদের তিনটি ছেলে রয়েছে।
মেসির কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জন হল:
৭ বার ব্যালন ডি’অর পুরস্কার জয়ী
৬ বার ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় পুরস্কার জয়ী
৬ বার কোপা দেল রে শিরোপা জয়ী
১০ বার লা লিগায় শিরোপা জয়ী
৪ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ী
১ বার ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ী
১ বার কোপা আমেরিকা জয়ী
- ইতালিয়ান বংশধর: মেসির পূর্বপুরুষরা ইতালির আনকোনার অধিবাসী ছিলেন। ১৮৮৩ সালে ভাগ্যের সন্ধানে অ্যাঞ্জেলো মেসি চলে আসেন আর্জেন্টিনায়।
- গ্রান্দোলি থেকে যাত্রা: মেসির প্রথম ক্লাব হিসেবে নিউয়েলস ওল্ড বয়েজের কথা লেখা হয়। তবে একেবারে নির্ভুল তথ্য চাইলে মেসির প্রথম ক্লাবটির নাম কিন্তু গ্রান্দোলি।
- কষ্টের শৈশব: মেসির বাবা হোর্হে একজন শ্রমিক ছিলেন এবং মেসির মা সেলিয়াও খণ্ডকালীন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করতেন। ১১ বছর বয়সে মেসির গ্রোথ হরমোনের ঘাটতির অসুখ ধরা পড়ে। যেটার চিকিত্সা ব্যয় মাসে ৯০০ ডলার।
- ন্যাপকিনেই চুক্তি: বার্সেলোনার প্রথম স্পোরটিং ডিরেক্টর কার্লেস রেক্সাস মেসিকে দেখার পর তাৎক্ষণিক তার বাবার সঙ্গে মেসির ব্যাপারে চুক্তি সাক্ষর করেন। সেখানো কোনো কাগজ না থাকায় ন্যাপকিন বা টিস্যু পেপারে চুক্তির স্বাক্ষর করেন।
- দুটি পাসপোর্ট: মেসির রয়েছে দুটি পাসপোর্ট। একটি আর্জেন্টিনার নাগরিক হিসেবে। অন্যটি স্পেনের নাগরিক হিসেবে।
- দ্য ফ্লি: মেসিকে তার ক্ষিপ্রতা, তৎপরতা এবং গতির কারণে ডাকা হয় ‘দ্য ফ্লি’ নামে।
- ব্যক্তিগত জীবন: মেসি আনতোনেল্লা রোকুজ্জোর সঙ্গে বিবাহিত এবং তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে।
মেসির সাফল্যের গল্প
- বার্সেলোনার সাথে যাত্রা: বার্সেলোনার যুব একাডেমিতে যোগদানের পর থেকেই মেসির প্রতিভা সকলকে মুগ্ধ করে।
- ব্যালন ডি’অর: মেসি টানা চারবারসহ মোট আটবার ব্যালন ডি’অর জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করেছেন, যা ফুটবলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
- আর্জেন্টিনার জাতীয় দল: ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে শিরোপা এনে দিয়ে মেসি ফুটবলের ইতিহাসে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখেছেন।
লিওনেল মেসি ইন্টার মিয়ামি: এক নতুন অধ্যায়
ফুটবলের কিংবদন্তি লিওনেল মেসি যোগদানের পর ইন্টার মিয়ামি ক্লাবটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মেসির আগমন মেজর লিগ সকারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে এবং মিয়ামিকে ফুটবলের মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিয়েছে।
কেন মেসি ইন্টার মিয়ামি?
- নতুন চ্যালেঞ্জ: মেসি তার ক্যারিয়ারের শেষ দিকে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ খুঁজছিলেন এবং মার্কিন ফুটবল বাজার তাকে আকৃষ্ট করেছিল।
- পরিবার: মিয়ামি মেসির পরিবারের জন্য একটি আদর্শ জায়গা, বিশেষ করে তাদের সন্তানদের।
- ক্লাবের দর্শন: ইন্টার মিয়ামির মালিক ডেভিড বেকহ্যামের দর্শন এবং ক্লাবের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা মেসিকে আকৃষ্ট করেছিল।
মেসির ইন্টার মিয়ামিতে প্রভাব
- টিকিট বিক্রি: মেসির আগমনের পর ইন্টার মিয়ামির টিকিটের চাহিদা আকাশচুম্বী হয়েছে।
- দর্শক সংখ্যা: মিয়ামির স্টেডিয়ামে দর্শক সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
- মিডিয়া মনোযোগ: মেসি এবং ইন্টার মিয়ামি আন্তর্জাতিক মিডিয়ার নজর কেড়েছে।
- ক্লাবের জনপ্রিয়তা: ইন্টার মিয়ামি এখন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাব।
লিওনেল মেসির উচ্চতা কত ?
লিওনেল মেসির উচ্চতা হলো ১.৭০ মিটার বা প্রায় ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি।
কেন অনেকে মনে করেন মেসি খুব ছোট?
- খেলার মাঠে: ফুটবলের মাঠে অন্য খেলোয়াড়দের তুলনায় মেসি কিছুটা ছোট হওয়ায় তাকে ছোট মনে হতে পারে।
- অন্যান্য সুপারস্টারদের তুলনা: ফুটবল জগতের অন্যান্য সুপারস্টাররা সাধারণত লম্বা হয়ে থাকেন। তাদের তুলনায় মেসি কিছুটা কম লম্বা।
কিন্তু উচ্চতা কখনো মেসির জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। তার দক্ষতা, গতি এবং বল নিয়ন্ত্রণের কারণে তিনি বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের একজন হয়ে উঠেছেন।
আসুন জেনে নেই মেসির বিষয়ে সকল প্রশ্নের উত্তর গুলো :
লিওনেল মেসির জন্মদিন কবে ?
লিওনেল মেসির জন্মদিন হলো ২৪ জুন। তিনি ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন আর্জেন্টিনার রোজারিওতে জন্মগ্রহণ করেন।
লিওনেল মেসি কোন দেশের খেলোয়াড় ?
লিওনেল মেসি একজন আর্জেন্টিনার পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি আর্জেন্টিনার জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলেন এবং দেশের জন্য অনেক গৌরব অর্জন করেছেন।
তবে মজার ব্যাপার হলো, মেসির পূর্বপুরুষরা ইতালির ছিলেন। তাই তিনি ইতালিয়ান বংশোদ্ভূতও বলা যায়।
লিওনেল মেসি বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক ?
লিওনেল মেসি বাংলাদেশে অসাধারণভাবে জনপ্রিয়। তার অসাধারণ দক্ষতা, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব এবং সাধারণ পরিবার থেকে বিশ্বের সেরা ফুটবলার হওয়ার যাত্রা বাংলাদেশি ভক্তদের মন জয় করে নিয়েছে। ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে শিরোপা এনে দেওয়ার পর তার জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে।
লিওনেল মেসির গোল ?
লিওনেল মেসি বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের একজন। তার গোল করার দক্ষতা অসাধারণ। ফ্রি কিক, পেনাল্টি, ড্রিবলিং, হেডার, দূর থেকে শট সব ধরনের গোলই তিনি করতে পারেন। তার গোলের কৌশল, নির্ভুলতা, গতি সবকিছুই অনন্য। মেসি তার ক্যারিয়ারে বার্সেলোনা, পিএসজি এবং আর্জেন্টিনার হয়ে ৮০০+ গোল করেছেন।
লিওনেল মেসির বিয়ে এবং তার বউ সম্পর্কে অনেকেরই কৌতূহল থাকে ?
মেসির স্ত্রী:
লিওনেল মেসির স্ত্রীর নাম আন্তোনেলা রোকুজ্জো। তারা ছোটবেলা থেকেই পরস্পরকে চেনেন এবং দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের পর ২০০৮ সাল থেকে প্রেম করতে শুরু করেন।
বিবাহ:
মেসি এবং আন্তোনেলা ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো সর্বসাধারণের সামনে একসঙ্গে দেখা দেন। এরপর ২০১৭ সালের ৩০ জুন আর্জেন্টিনার রোজারিওতে একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের বিয়েতে পরিবারবর্গ এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন।
সন্তান:
মেসি এবং আন্তোনেলার তিনটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তাদের প্রথম সন্তান তিয়াগো মেসি রোকুজ্জো ২০১২ সালে, দ্বিতীয় সন্তান মাতেও মেসি রোকুজ্জো ২০১৫ সালে এবং তৃতীয় সন্তান সিরো মেসি রোকুজ্জো ২০১৮ সালে জন্মগ্রহণ করে।
প্রেমের গল্প:
মেসি এবং আন্তোনেলার প্রেমের গল্প অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা। ছোটবেলার বন্ধুত্ব থেকে শুরু করে বিবাহ এবং সন্তানদের জন্ম, তাদের সম্পর্ক সবসময়ই মিডিয়ার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।
আপনি যদি মেসি এবং আন্তোনেলার প্রেমের গল্প সম্পর্কে আরো জানতে চান, তাহলে অনলাইনে অনুসন্ধান করতে পারেন।
মনে রাখবেন: মেসি এবং আন্তোনেলার ব্যক্তিগত জীবন তাদের নিজস্ব। তাদের গোপনীয়তা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
লিওনেল মেসির রেকর্ড ?
লিওনেল মেসি ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল এবং জনপ্রিয় খেলোয়াড়দের একজন। তার ক্যারিয়ারে তিনি অসংখ্য রেকর্ড গড়েছেন। এখানে তার কিছু উল্লেখযোগ্য রেকর্ড উল্লেখ করা হল:
- ব্যালন ডি’অর: মেসি টানা চারবারসহ মোট আটবার ব্যালন ডি’অর জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করেছেন, যা ফুটবলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
- ইউরোপীয় সোনালী জুতো: তিনি সর্বোচ্চ ছয়বার ইউরোপীয় সোনালী জুতো জয়েরও কৃতিত্ব অর্জন করেছেন।
- ক্লাব ট্রফি: তিনি পেশাদার ফুটবলে সর্বমোট ৪৪টি ট্রফি জয় করেছেন, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
- আন্তর্জাতিক গোল: মেসি আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
- হ্যাটট্রিক: মেসি ক্লাব এবং দেশের হয়ে অসংখ্য হ্যাটট্রিক করেছেন।
- অ্যাসিস্ট: মেসি অনেক গোল করার পাশাপাশি অনেক গোল করতে সাহায্য করেছেন।
এছাড়াও মেসির অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রেকর্ডের মধ্যে রয়েছে:
- এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড
- এক ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড
- সর্বোচ্চ ফ্রি কিক
- সর্বোচ্চ পেনাল্টি
- সর্বোচ্চ ড্রিবলিং
মেসির এই রেকর্ডগুলো তার দক্ষতা, ধৈর্য এবং নিষ্ঠার পরিচয় দেয়।
Lionel Messi উত্তরাধিকার:
মেসির উত্তরাধিকার অনেক দিন ধরে থাকবে। তিনি ফুটবলের একজন আইকন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।
উপসংহারে বলা যায়, লিওনেল মেসি ফুটবলের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের একজন হিসেবে নিজের নাম অক্ষরে অক্ষরে লিখেছেন। তার খেলা দেখা মানেই আনন্দ।
উপসংহার
লিওনেল মেসি কেবল একজন ফুটবলারই নন, তিনি ফুটবলের ই তিহাসে একজন কিংবদন্তি। তার দক্ষতা, নিবেদন এবং সফলতা ফুটবলকে আরও সুন্দর করে তুলেছে।
অসাধারণ দক্ষতা: মেসির বল নিয়ন্ত্রণ, ড্রিবলিং, পাসিং এবং শুটিং সব ক্ষেত্রেই তিনি অনন্য। ম্যাচ জয়ী মুহূর্ত: গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তিনি প্রায়ই ম্যাচ জয়ী গোল করেন বা গোল করতে সাহায্য করেন। নেতৃত্ব: তিনি দলের একজন দুর্দান্ত নেতা এবং অন্য খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করতে পারেন। সমর্থকদের প্রিয়: মেসি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রীড়া তারকা। তার খেলা দেখতে দর্শকরা স্টেডিয়াম ভরে ওঠে। রেকর্ড: মেসি ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রেকর্ড ভেঙেছেন।
FOR MORE UPDATE FLOW jitabet English News and jitabet Bangla News