Bijoy প্রায় ৩ বছর পর টেস্ট দলে বিজয়; এনামুল হক আবার ফিরলেন বাংলাদেশের টেস্ট স্কোয়াডে। ক্রিকেট কেবল একখানা ব্যাট আর বলের খেলা নয়। এটি সাহস, অপেক্ষা, অধ্যবসায় ও প্রত্যাবর্তনের গল্পও বটে। সেই গল্পেই যুক্ত হল আরেকটি অধ্যায়—এনামুল হক বিজয়ের টেস্টে প্রত্যাবর্তন।
২০২২ সালের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষবার টেস্ট খেলেছিলেন বিজয়। তারপর দীর্ঘ বিরতি। অনেকেই ভেবেছিল, হয়তো আর কখনও লাল বলের ক্রিকেটে দেখা যাবে না তাকে। কিন্তু ক্রিকেট সবসময়ই চমকের খেলা, আর এবারও তাই হল।
Bijoy অপেক্ষা, সংগ্রাম ও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প
এনামুল হক বিজয়ের ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল দুর্দান্তভাবে। ২০১২ সালে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে তাঁর প্রথম ওয়ানডে শতক তাকে জাতীয় দলের অন্যতম প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত করায়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইনজুরি, ফর্মহীনতা এবং কিছু ভুল সিদ্ধান্ত তার ক্যারিয়ারে ছন্দপতন ঘটায়।
যদিও টেস্টে সুযোগ খুব একটা পাননি, তবে সুযোগ পেলেই তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা—৫টি টেস্টে মাত্র ১০০ রান, কোনো হাফ সেঞ্চুরিও নেই। এমন পারফরম্যান্স যেকোনো খেলোয়াড়কে হতাশ করত। কিন্তু বিজয় হাল ছাড়েননি।
তিনি নিজের খেলাকে আরও নিখুঁত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ঘরোয়া ক্রিকেটে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, জাতীয় ক্রিকেট লীগ—যেখানে সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেই নিজেকে প্রমাণ করে গেছেন।
বিজয়ের ৫০ সেঞ্চুরির কীর্তি: একটি বিরল অর্জন
যখন কেউ বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে ৫০টি সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব অর্জন করে, তখন তাকে অগ্রাহ্য করা অসম্ভব। বিজয় সেই বিরল অর্জন সম্পন্ন করে দেশবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
এই সেঞ্চুরিগুলো কেবল সংখ্যা নয়, বরং এগুলো বিজয়ের অধ্যবসায়, মানসিক দৃঢ়তা এবং শত বিপরীত পরিস্থিতিতেও লড়ে যাওয়ার প্রতীক। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন—কেবল ট্যালেন্ট নয়, পরিশ্রমই কাউকে সফল করে তোলে।
টেস্টে ফিরেই আলোচনায় বিজয়
২০২৫ সালের এপ্রিল। প্রথম টেস্টে হেরে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দ্বিতীয় টেস্টের জন্য দল ঘোষণা করে। আর সেখানেই দেখা যায় পরিচিত এক নাম—এনামুল হক বিজয়।
এমন একজন খেলোয়াড় যিনি লাল বলের ক্রিকেট থেকে বহুদিন দূরে ছিলেন, হঠাৎ করে তার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কিছু প্রশ্ন থাকলেও, ভক্তদের মুখে হাসি ফোটে। কারণ তারা জানেন, বিজয় এখন ভিন্ন একজন খেলোয়াড়। তিনি এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী, অভিজ্ঞ এবং ক্রিকেট বোঝার দিক থেকে পরিণত।
বিজয়ের ব্যাটে ভর করে আশার আলো
বাংলাদেশের টেস্ট দল বর্তমানে রূপান্তরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম এবং মেহেদী হাসান মিরাজরা যেমন আছেন, তেমনি আছেন তানজিম হাসান সাকিব, মাহিদুল ইসলামদের মতো নতুন মুখ।
বিজয়ের অন্তর্ভুক্তি এই দলটিকে আরও ভারসাম্যপূর্ণ করেছে। ওপেনিংয়ে একাধিক ব্যর্থতার পর তার অভিজ্ঞতা এবং ফোকাস দলকে সাহস জোগাবে। পাশাপাশি, তরুণদের জন্য তিনি হবেন রোল মডেল, যিনি দেখিয়েছেন কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়।
টেস্টে বিজয়ের সুযোগ কীভাবে কাজে লাগবে?
বিজয়ের জন্য এই সুযোগ একটি “করো না বা মরো” পরিস্থিতি। এখনো টেস্টে তার নামের পাশে বড় কোনো ইনিংস নেই। এবার যদি তিনি সুযোগ পেয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারেন, তাহলে সেটা হবে শুধুমাত্র তার ক্যারিয়ার নয়, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেও একটি নতুন অধ্যায়।
চট্টগ্রামের পিচ সাধারণত ব্যাটসম্যানদের সহায়ক হয়, যা বিজয়ের জন্য আদর্শ মঞ্চ হতে পারে। তার টেকনিক, শট সিলেকশন এবং স্ট্রোক প্লে যদি ঠিক থাকে, তবে তিনি এই মঞ্চে জ্বলে উঠতেই পারেন।
বিজয়ের মতো প্রত্যাবর্তন আরও দরকার জাতীয় দলে
ক্রিকেট একমাত্র খেলা যেখানে ‘কমব্যাক’ শব্দটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। ক্রিকেটারদের জীবনে চোট, অফ-ফর্ম, কিংবা বাদ পড়া—সবই স্বাভাবিক। কিন্তু যারা এই সব কিছুর মাঝেও নিজেকে ধরে রাখতে পারে, তাদের ফেরাটা হয় অনুপ্রেরণাদায়ক।
বিজয়ের টেস্টে ফিরে আসা আরও অনেক তরুণ খেলোয়াড়কে দেখাবে, কীভাবে ধৈর্য এবং কঠোর পরিশ্রম দিয়ে আবার শীর্ষে ফেরা যায়।
চট্টগ্রাম টেস্টে কী হবে নজরকাড়া মুহূর্ত?
এখন সবার নজর থাকবে এনামুল হক বিজয়ের দিকেই। তিনি কি পারবেন নিজের নতুন অধ্যায়ের শুরুটা স্মরণীয় করে তুলতে? পারবেন কি তিনি জাতীয় দলকে একটা শক্তিশালী ওপেনিং জুটি উপহার দিতে?
সময়ের অপেক্ষা। তবে এটুকু বলা যায়—বিজয়ের ফেরাটা ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে শুধু একটি খবর নয়, এটি একটি আশাবাদের বার্তা।
FAQs
এনামুল হক বিজয় কত বছর পর টেস্ট দলে ফিরেছেন?
তিনি প্রায় তিন বছর পর টেস্ট দলে ফিরেছেন, সর্বশেষ ২০২২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছিলেন।
বিজয়ের টেস্ট পরিসংখ্যান কেমন?
তিনি ৫টি টেস্ট ম্যাচে মাত্র ১০০ রান করেছেন, গড় ১০, নেই কোনো হাফ-সেঞ্চুরি।
তাকে কেন দলে নেয়া হয়েছে?
বিজয় ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলেছেন এবং ৫০টি সেঞ্চুরি করে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন।
চট্টগ্রামে টেস্ট কবে শুরু?
২৮ এপ্রিল ২০২৫, চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে।
বিজয়ের প্রত্যাবর্তন নিয়ে কী বলছে বিশ্লেষকরা?
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিজয়ের এই প্রত্যাবর্তন তার পরিশ্রম এবং ধারাবাহিকতার ফসল।
বিজয়ের প্রত্যাবর্তন তরুণদের কী বার্তা দেয়?
এটি তরুণদের শেখায়, হার মানা নয়, বরং বারবার চেষ্টা করাই সফলতার মূল।
JitaBet , JitaWin , এবং JITA88 এ আপনার বাজি রাখুন , তারা সত্যিই ভাল প্রতিকূলতা অফার করে, খেলুন এবং বড় জিতুন!
উপসংহার:
এনামুল হক বিজয়ের টেস্ট দলে ফিরে আসা কেবল একটি খেলোয়াড়ের পুনরাগমনের গল্প নয়—এটি একটি প্রতীক, যে কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাস কখনো বৃথা যায় না। প্রায় তিন বছর অপেক্ষার পর বিজয়ের নাম যখন টেস্ট স্কোয়াডে দেখা গেল, তখন সেটা ছিল কেবল একটি ঘোষণা নয়, বরং হাজারো ক্রিকেটপ্রেমীর হৃদয়ে আলো ছড়ানোর মতো এক মুহূর্ত।
এই ফিরে আসা বিজয়ের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্যও তা এক নতুন অধ্যায়ের শুরু। তিনি যদি এবার নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে সেটি হয়ে উঠবে তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার চিরস্থায়ী বাতিঘর।
আমরা জানি না বিজয়ের ব্যাট থেকে কত রান আসবে, কিন্তু তার মধ্যে যে প্রত্যয়, সেই আত্মবিশ্বাসই বলছে—এই ফিরে আসা হয়তো এবার শুধু উপস্থিত থাকার জন্য নয়, বরং ইতিহাস গড়ার জন্য।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন প্রত্যাবর্তন হোক আরও বেশি, যেখানে প্রতিটি পরিশ্রমী খেলোয়াড় নিজের প্রাপ্যটুকু ফিরে পায়, এবং একেকটি গল্প আমাদের গর্বে বুক ফুলিয়ে তোলে।
For More Update Follow JitaSports English News and JitaSports BD News